আর্থিকনীতি ও রাজস্বনীতির মধ্যে পার্থক্য(Difference between Monetary policy and fiscal policy)
আর্থিকর্নীতি ও রাজস্বনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একই হলেও পদ্ধদিগত দিক হতে দুইনীতি ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। আর্থিক নীতি ও রাজস্বনীতির মধ্যে পার্থক্য গুলি নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. সংজ্ঞাগত পার্থক্য:
যে নীতির সাহায্যে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ করে তাকে আর্থিকনীতি বলা হয়। আবার অর্থনীতির যে শাখায় সরকারের আয় ব্যয় এবং ঋণ সংক্রান্ত নীতি নিয়ে আলোচনা করা তাকে রাজস্বনীতি বলে।
২. অর্থনৈতিক উন্নয়নগত পার্থক্য:
আর্থিকনীতি যথাযথ প্রয়োগের দ্বারা মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন করে থাকে অপরদিকে রাজস্বনীতির যথাযথ প্রয়োগের দ্বারা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়।
৩. পরিচালনাগত পার্থক্য :
আর্থিকনীতি পরিচালনা করে আর্থিক কর্তৃপক্ষ বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পক্ষান্তরে রাজস্বনীতি পরিচালনা করে দেশের সরকার।
৪. প্রভাব বিস্তারগত পার্থক্য:
অর্থব্যবস্থা উপর আর্থিকর্নীতি পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে থাকে অন্যদিকে অর্থব্যবস্থার উপর রাজস্বনীতি প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে থাকে।
৫. বাস্তবায়নগত পার্থক্য:
বিদেশিক বিনিময় হার এবং ঋণনীতির পরিবর্তন করে আর্থিক নীতি বাস্তবায়ন করা হয়। পক্ষান্তয়ে সরকারী আয় ব্যয়ের পরিবর্তন করে রাজস্বনীতি বাস্তবায়ন করা হয়।
৬. হাতিয়ার গত পার্থক্য:
ব্যাংক হার, খোলা বাজার নীতি, রিজাভনীতি ইত্যাদি আর্থিক নীতি হাতিয়ার। অন্যদিকে সরকারের করনীতি, ভর্তুকী, সরস্কার আয়-ব্যয়, সরকারী ঋণ ইত্যাদি রাজস্বনীতির হাতিয়ার।
৭. iS- LM রেখাগত পার্থক্য:
দ্রব্য বাজারে IS রেখার আকৃতির উপর আর্থিকনীতির কার্যকারিতা নির্ভর করে। অন্যদিকে অর্থবাজারে LM রেখার আকৃতির উপর রাজস্বনীতির কার্যকারিতা নির্ভরশীল।
৮. ভারল্যফাঁদগত পার্থক্য:
আর্থিকর্নীতির কার্যকারীতার ক্ষেত্রে তারল্যফাঁদ বাধা হিসাবে কাজ করে থাকে পক্ষান্তরে রাজস্বনীতির কার্যকারীতার ক্ষেত্রে তারণ্যফাঁদ কোন বাধা সৃষ্টি করে না।
৯. অর্থবাজার ও উৎপন্ন বাজরগত পার্থক্য:
আর্থিকনীতি অর্থ বাজারকে বিশ্লেষণ করে থাকে অন্যদিকে রাজস্বনীতি উৎপন্ন বাজারকে বিশ্লেষণ করে।
0 Comments