অর্থনীতির ভাইভা প্রশ্ন-উত্তর
০১. Foreign Aid কি?
উত্তর: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করার জন্য উন্নত দেশ থেকে অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে সম্পদ হস্তান্তর করাকে Foreign Aid বা বৈদেশিক সাহায্য বলে ।০২. বৈদেশিক সাহায্য কত প্রকার?
উত্তর: বৈদেশিক সাহায্যকে বিভিন্নভাবে ভাগ করা হয়। যেমন—(i) শর্তের দিক বিবেচনায়
ক. শর্তযুক্ত ঋণ : এক্ষেত্রে ঋণে শর্তারোপ করা থাকে; যেমন— কি পরিমাণ consultancy নিতে হবে, কোন খাতে ব্যয় করতে হবে, ঋণ প্রদানকারি দেশ থেকে কি পরিমাণ কাঁচামাল নিতে হবে। ইত্যাদি শর্ত উল্লেখ থাকে ।
খ. শর্তহীন ঋণ : এক্ষেত্রে কোনো শর্ত থাকে না।
(ii) ফেরত প্রদানের বিবেচনায়—
ক. ঋণ : এ সাহায্য মেয়াদান্তে সুদসহ ফেরত দিতে হয়।
খ. অনুদান : এরূপ সাহায্য প্রত্যার্পণ করতে হয় না।
(iii) উৎস অনুসারে
ক. দ্বিপাক্ষিক : উন্নত দেশ থেকে অনুন্নত দেশের ঋণ।
খ. বহুপাক্ষিক : জাতিসংঘ, IMF-এর loan.
(iv) ফেরত প্রদানের ধরন অনুসারে
ক. কোমল;
খ. মানানসই;
গ. কঠিন।
০৩. বৈদেশিক সাহায্য কি কি প্রেক্ষিতে হতে পারে?
উত্তর: বাংলাদেশে সাধারণত তিনভাবে বৈদেশিক সাহায্য আসে। যথা—ক. প্রকল্প সাহায্য : উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উভয় দেশের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে যে সাহায্য দেয়া হয় তাকে প্রকল্প সাহায্য বলে ।
খ. খাদ্য সাহায্য : এক্ষেত্রে খাদ্যশস্য সাহায্য হিসেবে প্রদান করা হয়।
গ. পণ্য সাহায্য : পণ্যের মাধ্যমে প্রদত্ত সাহায্য হলো পণ্য সাহায্য। শিল্পের কাঁচামাল, খুচরা যন্ত্রাংশ, সার ইত্যাদি এ সাহায্যের অধীনে প্রদান করা হয়।
০৪. অপ্রচলিত রপ্তানি দ্রব্য কি?
উত্তর: হিমায়িত মৎস্য, ভেষজ ও রাসায়নিক দ্রব্য, শাকসবজি ও ফলমূল, হস্তশিল্পজাত দ্রব্য ইত্যাদি ।০৫. FOB কি?
উত্তর: FOB হচ্ছে Free On Board। এটা এমন একটা Price Quotation যেখানে বিক্রেতাকে মাল জাহাজে উঠিয়ে দিতে হয়।০৬. C.IF কি?
উত্তর: C.I.F হচ্ছে Cost Insurance and Freight | এই Term আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এটা এমন একটা Price Quotation, যা দ্রব্যের মূল্য, জাহাজ ভাড়া এবং ইন্সুরেন্স অন্তর্ভুক্ত করে।
অর্থনীতি বিষয়ে নমুনা সাক্ষাৎকার । অর্থনীতি বিষয়ে ভা্ইভা প্রশ্ন-উত্তর |
০৭. 'Giffen good' কি?
উত্তর: সাধারণত অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত অবস্থায় কোনো কোনো দ্রব্যের দাম বাড়লে চাহিদার পরিমাণ কমে এবং দাম কমলে চাহিদার পরিমাণ বাড়ে। তবে এমন কিছু দ্রব্য আছে, যাদের দাম বাড়ার সাথে সাথে চাহিদার পরিমাণও বৃদ্ধি পায়, আবার দাম কমার সাথে সাথে চাহিদার পরিমাণও হ্রাস পায়। এ জাতীয় দ্রব্যকে 'Giffen goods' বলা হয়। যেমন— মোটা চাল, আলু। Sir Robert Giffen (১৮৩৭-১৯১০) সর্বপ্রথম এই মতবাদ উল্লেখ করেন ।০৮. BL কি?
উত্তর: BL হচ্ছে Bill of Lading; সাধারণত সমুদ্রপথে মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে জাহাজ কর্তৃপক্ষ এটি ইস্যু করে থাকে। মালামাল (Consignment) জাহাজে বোঝাই করে জাহাজ কর্তৃপক্ষ মালামাল পণ্যের বিবরণ, শর্তাবলী এবং ভাড়ার বিবরণ দিয়ে রপ্তানিকারককে যে দলিল (Document) প্রদান করে তাই হচ্ছে BL.০৯. উদ্যোক্তা কাকে বলে?
উত্তর: Entrepreneur-এর অর্থ হচ্ছে উদ্যোক্তা। যিনি কোনো কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করেন, তাকে উদ্যোক্তা বলা হয়। অর্থনীতির ভাষায়, যিনি বাজার ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা অর্জন করে উৎপাদনের উপাদানসমূহকে একত্রিত করেন এবং সমন্বয় সাধন করেন তাকে উদ্যোক্তা বলা হয়। উদ্যোক্তা কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ ঝুঁকি বহন করেন ।১০. জাতীয় আয় পরিমাপের পদ্ধতি কি?
উত্তর: জাতীয় আয় পরিমাপের বিভিন্ন পদ্ধতি বিদ্যমান রয়েছে। যেমন— ব্যয় পদ্ধতি, মূল্য সংযোগ পদ্ধতি এবং আয় পদ্ধতি (Income method).১১. সুদ কাকে বলে?
উত্তর: মূলধন ব্যবহারের জন্য ঋণগ্রহীতা নির্দিষ্ট সময়ান্তে মূলধনের মালিককে যে দাম বা অর্থ প্রদান করে তা-ই হলো সুদ।১২. মুদ্রাস্ফীতির প্রকারভেদ বর্ণনা করুন।
উত্তর: অর্থের মূল্যের ক্রমাবনতি বা দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধিকে মুদ্রাস্ফীতি বলে। প্রফেসর স্যামুয়েলসন বলেন, 'দ্রব্যসামগ্রীর এবং উৎপাদনের উপাদানের মূল্যবৃদ্ধির সময়কে সাধারণভাবে মুদ্রাস্ফীতি বলে ।’ দামস্তর বৃদ্ধির গতিবেগ অনুসারে মুদ্রাস্ফীতি তিন প্রকার :
ক. মৃদু মুদ্রাস্ফীতি (Mild Inflation) : দামস্তরের বৃদ্ধির হার খুব ধীরগতিতে হলে তাকে Mild inflation বলে।
খ. পদসকারী মুদ্রাস্ফীতি (Walking Inflation) : দামস্তর বৃদ্ধির হার বাড়লে এবং তা প্রকট হলে তাকে পদসকারী মুদ্রাস্ফীতি বলে। এক্ষেত্রে মূল্যস্তর বৃদ্ধির হার ৫-৫০ ভাগ হতে পারে।
গ. লক্ষমান বা অতি মুদ্রাস্ফীতি (Galloping or Hyper Inflation) : অত্যন্ত দ্রুতগতিতে দামস্তর বাড়তে থাকলে তাকে বা অতি মুদ্রাস্ফীতি বলা হয় (Very rapid growth in the rate of inflation) দামস্তর বৃদ্ধির হার ৫০ কিংবা তদূর্ধ্ব হলে তাকে Galloping Inflation বলে এক্ষেত্রে অর্থের মূল্য হারিয়ে যায় এবং বিনিময়ের বিকল্প মাধ্যমসমূহ যেমন Burter system বা বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা কার্যকরী হয়ে থাকে ।
১৩. মুদ্রাস্ফীতির কারণসমূহ কি কি?
উত্তর: যেসব কারণে মুদ্রাস্ফীতি হতে পারে তা হচ্ছে :ক. অর্থের যোগান বৃদ্ধি
খ. অতিরিক্ত সরকারি ব্যয়
গ. ঋণের প্রসার (বিশেষত ব্যাংক ঋণ)
ঘ. অর্থের প্রচলন বৃদ্ধি
ঙ. যুদ্ধের ব্যয়
চ. প্রাকৃতিক দুর্যোগ
ছ. উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি
জ. চোরাচালান ও মজুতদারি ইত্যাদি।
১৪. মুদ্রাস্ফীতির ফলাফল কি?
উত্তর: মুদ্রাস্ফীতির বিবিধ ফলাফল রয়েছে। কিছু Positive effect রয়েছে। যেমন- উৎপাদনকারীরা মুদ্রাস্ফীতির সময় লাভবান হয়; তাদের উৎপাদিত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়; বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়; কর্মসংস্থান ও উৎপাদনের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। ঋণগ্রহীতারাও Inflation-এর ফলে লাভবান হয়। করদাতারাও লাভবান হয়। যেসব শ্রমিক নিজস্ব খামারে উৎপাদন করে তারাও লাভবান হয়।অপরদিকে সাধারণ ভোক্তা, ঋণদাতা, করগ্রহীতা মুদ্রাস্ফীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মুদ্রাস্ফীতির ফলে রপ্তানি হ্রাস পায় এবং আমদানি বৃদ্ধি পায়।
১৫. Gini Coefficient (সহগ) কি?
উত্তর: গিনি Coefficient (সহগ) হচ্ছে এমন একটা Coefficient, যা বণ্টনের অসমতার মাত্রা নির্দেশ করে। Lorenz curve (লরেঞ্জ রেখা)-এর ওপর ভিত্তি করে এই সহগ পরিমাপ করা হয় ।১৬. লরেঞ্জ রেখা (Lorenz Curve) কি?
উত্তর: লরেঞ্জ রেখা (Lorenz Curve) এমন একটা চিত্র, যা বণ্টনের অসমতার মাত্রা প্রদর্শন করে এর একপাশে ক্রমপুঞ্জিত জনসংখ্যার হার এবং অপর প্রাশে ক্রমপুঞ্জিত আয়ের হার দেখানো হয়।১৭. Bullish market বলতে কি বোঝেন?
উত্তর: 'Bullish market শেয়ার বাজারের এমন একটা অবস্থা, যখন মূল্য বৃদ্ধির স্পষ্ট লক্ষণ লক্ষ করা যায় ।১৮. Blue chip কি?
উত্তর: Bluechip এমন এক ধরনের শেয়ার, যাকে সাধারণত নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয় (Industrial shares that are thought to be safe investment) |১৯. LDC সম্পর্কে কি জানেন?
উত্তর: LDC বলতে আমরা 'Least Developed Country বুঝি। ১৯৭১ সালে UNCTAD (United Nations Conference on Trade and Development) এর সাধারণ অধিবেশনে বিশ্বের ২৪টি দেশকে LDC হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বর্তমানে এই LDC এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭টিতে। LDC ভুক্ত দেশের নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্যাবলী বিদ্যমান :ক. মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় (GNI) ১০২৫ ডলার অথবা তার কম।
খ. মানবসম্পদ সূচক (HAI) ৬০ বা এর কম।
গ. আর্থিক ভঙ্গুরতা সূচক (EVI) ৩৬ বা এর বেশি।
২০. মূল্য ও দামের সাথে সম্পর্ক কি?
উত্তর: মূল্যকে অর্থনীতিতে দুভাগে ভাগ করা হয়। যথা—ক. ব্যবহারিক মূল্য (Value in Use) এবং
খ. বিনিময় মূল্য (Value in Exchange)। কোনো দ্রব্য ব্যবহারের মাধ্যমে যে পরিমাণ উপযোগ বা তৃপ্তি পাওয়া যায় তাকে ব্যবহারিক মূল্য বলে।
পক্ষান্তরে, কোনো দ্রব্যের বিনিময়ে যে পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায় তাকে দাম বলে।
0 Comments